লকডাউন ডায়েরি – ২৯ মে, ২০২০

২৯.‌০৫.‌২০২০। শুক্রবার

সকাল ৭.‌১৩

মন্ত্রী সুজিত বসু সস্ত্রীক করোনায় আক্রান্ত। কাল গভীর রাতে জেনেছিলাম। খারাপই লাগছিল। সুজিত‌’দাই রাজ্যের প্রথম মন্ত্রী, যিনি কোভিড–১৯ সংক্রমণের শিকার হলেন। উপসর্গ না থাকায় বাড়িতেই চিকিৎসাধীন আছেন। মনে করা হচ্ছে, বাড়ির পরিচারক ও পরিচারিকার থেকেই স্বামী–স্ত্রী দু’জনে সংক্রমিত হয়েছেন। ওই পরিচারক এবং পরিচারিকা সম্প্রতি কোভিড পজিটিভ হয়েছিলেন। তবে থ্যাঙ্ক গড, সুজিত’দার দুই সন্তান কোভিড নেগেটিভ।

এর আগে তৃণমূলের বিধায়ক তমোনাশ ঘোষও করোনায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। এখনও তিনি হাসপাতালেই আছেন। তমোনাশ আবার শাসকদলের প্রথম বিধায়ক, যিনি করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।

সুজিত’দা–তমোনাশ’দা দু’জনকেই ব্যক্তিগতভাবে বহুদিন ধরে চিনি। আশা এবং প্রার্থনা করছি, দু’জনেই দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবে। সুজিত’দাকে ফোন করেছিলাম। খানিকক্ষণ কথা হল। গলা শুনে মনে হল না যে, খুব ঘাবড়ে গিয়েছে বা ওইধরনের কিছু। শুধু একটু বিমর্ষ গলায় বলল, ‘আমি তো সারাদিন ঘুরে বেড়ানো লোক। কোনওদিন ঘরবন্দি থাকিনি। তবে এখন তো কোনও উপায় নেই। ডাক্তারের পরামর্শে বাড়িতে থাকতেই হবে।’

বললাম, ‘সুস্থ হয়ে ওঠো। সাবধানে থেকো। নিজেদের যত্ন নিও।’

সকাল ৮.‌৩৫

জীবনের তিনটে দশক এই পেশায় কাটিয়ে এসে একটা কথা খুব মনে হয়। তবে শুধু এই পেশা বলে নয়, মনে হয় এই ভাবনাটা যে কোনও পেশার ক্ষেত্রেই সত্যি— কাজ করে সত্যিই কিছু হয় না। তার চেয়ে অনেক বড় বিষয় হল জনসংযোগ। পিআর। সম্পর্ক তৈরি করা এবং সেই সম্পর্ক রক্ষা করা।

মিঠুন’দা খুব জোর দিয়ে একটা কথা প্রায়ই বলত, ‘সাফল্য হল ৯০ শতাংশ কপাল আর ভাগ্য। মাত্র ১০ শতাংশ পরিশ্রম আর মেধা।’ ঠিকই। কপাল না থাকলে সাফল্য আসে না। আর কপালটা আমাদের হাতে নেই। কারও হাতেই নেই। অতএব, ভাগ্যে যা আছে সেটাই হবে। দীর্ঘদিনের অধ্যবসায়, চেষ্টা, পরিশ্রম কোনও কাজেই না লাগতে পারে। লাগলেও তার সঙ্গে কাজকর্মের কোনও সম্পর্ক থাকে না। আমরা নিজেদের পরিশ্রমকে গ্লোরিফাই করার জন্য এবং সত্যের জয় সর্বত্র— এটা প্রাণপণে প্রমাণ করার জন্য সেগুলো বলে থাকি। যাতে পরিশ্রমের উপর, অধ্যবসায়ের উপর এবং কাজের উপর আমাদের ভরসা থাকে। মানে, ঠিকঠাক কাজ যাকে বলে। কিন্তু ওটা তো আবার ঠিকঠাক কাজ নয়। ঠিকঠাক কাজ হল নিজেকে ঠিকঠাক, ঠিক সময়ে, ঠিক জায়গায় নিজেকে প্লেস করা।

ঠিকঠাক কাজ হল ওং নম–ওং নম করে ঠিক জায়গায় ঠিক সময়ে ঠিক বিল্বপত্রাঞ্জলিটি দেওয়া। তাতেই সিদ্ধিলাভ।

যত বয়স বাড়ছে, ততই এসব বোধিজ্ঞান লাভ হচ্ছে। কিন্তু এগুলো এই ডায়েরিতে লেখা কি ঠিক হল? ‌হল বোধহয়। এই ডায়েরি তো আসলে আত্মকথন। নিজের সঙ্গে নিজে কথা বলা। আর এই কথাগুলোই নিজে নিজেকে আজকাল বলে থাকি।

সকাল ৯.‌‌৫৩

পরিযায়ী শ্রমিকদের সীমাহীন দুর্দশা। রাস্তায় ধুঁকতে ধুঁকতে মরণ।
কোভিড–১৯ ভাইরাসের ক্রমশ প্রভাব বিস্তার। তজ্জনিত কারণে মৃতের সংখ্যা বৃদ্ধি।
চিনের সঙ্গে সীমান্ত সমস্যা।
উত্তর ও পশ্চিম ভারত জুড়ে পঙ্গপালের হানা।
অসমে ভূমিকম্প।
উত্তরাখন্ডে দাবানল।
বাংলায় প্রাকৃতিক দুর্যোগ।
অর্থনীতি গভীর থেকে গভীরতর সঙ্কটে।

চুম্বকে এখন এই হল ভারতবর্ষ! ‌আমার ভারতবর্ষ। আপনার ভারতবর্ষ।

বেলা ১১.‌২৮

বলিউডে শ্যুটিং শুরু করার জন্য নতুন গাইডলাইন দিয়েছে ‘প্রোডিউসার্স গিল্ড অফ ইন্ডিয়া’। তাতে যা বলা হয়েছে, তাতে মনে হয় না আর অমিতাভ বচ্চন অভিনীত কোনও নতুন ছবি আমরা ভবিষ্যতে দেখতে পাব। কারণ, ৬০ বছরের ঊর্ধ্বে কারও শ্যুটিং করা আপাতত বারণ। অমিতাভ এখন ৭৭। দ্বিতীয়ত, বলিউডে আর কোনও রোমান্টিক ছবি তৈরি হবে না। কারণ, আলিঙ্গন এবং চুম্বন বারণ।

আরও আছে। শ্যুটিং জোনে আসার আগে সক্কলকে চিকিৎসকের কাছ থেকে কোভিড–ফিট সার্টিফিকেট নিতে হবে। শ্যুটিং চলাকালীনও নিয়মিত করোনা পরীক্ষা করাতে হবে। শ্যুটিং লোকেশনে মাস্ক এবং ফেস শিল্ড পরতে হবে সকলকে। স্যানিটাইজার দিয়ে হাত ধুতে হবে। লোকেশন এবং স্টুডিওর গেট খোলার জন্য পিপিই পরিহিত নির্দিষ্ট কর্মী রাখতে হবে। না–ছুঁয়ে প্রতিনিয়ত দেহের তাপমাত্রা পরীক্ষা করতে হবে। ইত্যাদি, ইত্যাদি এবং ইত্যাদি।

এভাবে কি সিনেমা বা সিরিয়ালের শ্যুটিং সম্ভব?‌ আপাতদৃষ্টিতে তো মনে হচ্ছে সম্ভব নয়। লকডাউনের সময় বড়িতে বসে যেসব জুভেনাইল এবং খেলাচ্ছলমূলক ভিডিও তোলা হচ্ছে, সেগুলো তো আর পূর্ণাঙ্গ চলচ্চিত্রের বিকল্প হতে পারে না!‌ তাহলে কি এই ইন্ডাস্ট্রিটা পৃথিবী থেকে উঠে যাবে?‌ কত কোটি কোটি মানু্য, কত তারকা, কত টেকনিশিয়ান— সকলে বেকার আর অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়বেন?‌ লার্জার দ্যান লাইফ বলে আমাদের জীবনে আর কিছু থাকবে না?‌ জীবনে আর কোনও ‘আইকন’ থাকবে না?‌

এটা ভাবতেও কেমন যেন একটা লাগছে। মনে হচ্ছে, আর কী কী উঠে যাবে জীবন থেকে?‌

প্রসঙ্গত, টলিউডে শ্যুটিং শুরু নিয়ে আগামী ৪ জুন বৈঠক ডাকা হয়েছে। সেখানেও প্রোডিউসার্স গিল্ড অফ ইন্ডিয়ার গাইডলাইন মেনে চলার কথাই বলা হবে নিশ্চয়ই?‌ তাহলে?‌ এভাবে কি শ্যুটিং হয়?‌ বাংলা ইন্ডাস্ট্রির কী হবে?‌

আর সবচেয়ে বড় কথা, খবরের কাগজে পেজ থ্রি রিপোর্টিংয়ের কী হবে?‌ চরিত্রগুলোর কাজ না থাকলে তাদের সম্পর্কে, তাদের কাজ সম্পর্কে কী লেখা হবে?‌ যারা পেজ থ্রি কভারেজ করত, তারা কী করবে?‌ তারা কি মূল নিউজ ডেস্কে বা রিপোর্টিংয়ে চলে আসবে?‌

দুপুর ১২.‌৩১

যাঁরা বিভিন্ন শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছেন, ক্যান্সার–আক্রান্ত, গর্ভবতীরা যেন শ্রমিক স্পেশালে যাত্রা না করেন— নির্দেশ দিয়েছে ভারতীয় রেল। বাহ্‌, চমৎকার!‌

গত কয়েকদিনে শ্রমিক স্পেশালে বেশ কয়েকজন পরিযায়ী শ্রমিক এবং তাঁদের পরিবারের সদস্যদের মৃত্যু হয়েছে। তার জেরে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন নোটিস পাঠিয়েছে রেলমন্ত্রককে। সেই নোটিসের জেরেই তড়িঘড়ি এই নির্দেশিকা রেলের। কিন্তু তাহলে ওই পরিযায়ী শ্রমিকরা বাড়ি ফিরবেন কী করে?‌ ট্রেনে না উঠলে কি তারা আবার হাইওয়ে ধরে হাঁটবেন? ‌‌নাকি হাজার হাজার টাকা গুণাগার দিয়ে ট্রাকে চড়ে ফিরবেন?‌ তার কোনও ঠিকানা রেলমন্ত্রকের নির্দেশিকায় নেই।

চমৎকার‌! ‌মাথা ব্যথা হলে মাথাটা কেটে ফেলে দাও। এই হল দাওয়াই। কাটা মুণ্ডুটা কোথায় থাকবে বা‌ সেটা নিয়ে কী করা হবে,‌ তার জবাব দেওয়ার দায় তো আর জল্লাদের নেই!‌

দুপুর ১২.‌৩৫

আগামী ১ জুন থেকে আবার চারমাস আগে থেকে ট্রেনের টিকিট কাটা যাবে। কাটা যাবে তৎকাল টিকিটও। সারা দেশে চলবে ৩০টি বিশেষ রাজধানী এক্সপ্রেস, ২০০টি মেল এক্সপ্রেস এবং ৩০টি শ্রমিক স্পেশাল চলবে। এটাও রেলমন্ত্রকের নির্দেশিকা।

দুপুর ১.‌৪৯

নতুন করে এখন গাছ লাগানো সম্ভব নয়। লাগালেও তা ১০ বা ১৫ বছরের আগে বেড়ে উঠবে না। ফলে শিকড়সুদ্ধ উপড়ে যাওয়া বড় গাছগুলোকে আবার লাগানো হোক— এই মর্মে গীতশ্রী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় চিঠি লিখেছেন কলকাতা পুরসভার মুখ্য প্রশাসক ফিরহাদ হাকিমকে। চিঠিতে সই আছে লেক গার্ডেন্‌সের সৃজিত মুখোপাধ্যায় এবং অলকানন্দা রায়ের মতো বিখ্যাত এবং প্রভাবশালী বাসিন্দাদের।

ফিরহাদ বলছেন, এই নিয়ে অলরেডি চর্চা শুরু হয়েছে। গত তিনদিন ধরে লেকের মধ্যে এই নিয়ে সমীক্ষাও চলছে। কাল পুরসভায় বড়সড় মিটিং ডাকা হয়েছে এই বিষয়ে। যদি লেকের মধ্যে শিকড়সুদ্ধ উপড়ে পড়া গাছগুলিকে আবার পুনঃস্থাপিত করা যায়।

দুপুর ২.‌০২

দিলীপ ঘোষের পর লকেট চট্টোপাধ্যায়। বিজেপি–র সাংসদকে আজ আটকে দেওয়া হল বারুইপুরে। তিনি দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ত্রাণ দিতে যাচ্ছিলেন। পুলিশ লকেটকে আটকে দিয়ে বলেছে, তিনি গেলে আইনশৃঙ্খলার সমস্যা হবে।
নাছোড়বান্দা লকেট প্রায় ২০ মিনিট রাস্তায় দাঁড়িয়ে পুলিশ–প্রশাসনের সঙ্গে তর্ক করলেন। তারপর ফিরে গিয়ে স্থানীয় বিজেপি দফতরের সামনে অবস্থানে বসলেন। সেখান থেকেও মহিলা পুলিশ গিয়ে হাত ধরে টানাটানি করে তাঁকে উঠিয়ে দিল।

তবে ততক্ষণে হুগলির বিজেপি সাংসদ যতটা সম্ভব টিভি ফুটেজ খেয়ে ফেলেছেন।

বিকেল ৪.‌৪৫

নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী বলছেন, ‘এটা বুঝতে হবে। এটা স্প্রেড করে গেছে বেশি। যেহেতু যাতায়াতগুলো বেশি বেড়ে গেছে। এবং যাতায়াতগুলো প্ল্যানিং করে করা হয়। সুতরাং এখন আর কিছু করার নেই। এখন করোনাকে নিয়ে ঘুমোন। করোনাকে পাশবালিশ করে নিন। ঠিক আছে?‌ সরি, আমি ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। আমরা অনেক কন্ট্রোল করার চেষ্টা করেছি। কিন্তু আমার হাতে সবকিছু নেই। কিছু করার নেই। আকাশ যেমন আমার হাতে নেই। তেমনই ট্রেনটাও আমার হাতে নেই।’

মুখ্যমন্ত্রীর কথায় স্পষ্ট যে, তিনি করোনা সংক্রমণ ছড়ানোর জন্য মূলত আকাশ এবং রেলপথ খুলে দেওয়াটাই কারণ বলে মনে করছেন। তিনি বলছেন, ‘শ্রমিক এক্সপ্রেসের বদলে কি করোনা এক্সপ্রেস ঢুকিয়ে দিতে চাইছে?‌’

পাশাপাশিই মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, আগামী সোমবার, ১ জুন থেকে চা বাগান এবং চটকলে পুরোদমে কাজ শুরু হবে।

ওইদিনই, মানে সোমবাকর রাজ্যে সমস্ত ধর্মস্থান খুলে দেওয়া হচ্ছে। তবে সেখানে একসঙ্গে ১০ জনের বেশি জমায়েত করা যাবে না। সংশ্লিষ্ট ধর্মস্থানকে ওই বিষয়ে দায়িত্ব নিতে হবে। ধর্মস্থান নিয়মিত স্যানিটাইজও করাতে হবে। পোর্টালে দেখছি, তিনি বলেছেন, ট্রেনে গাদাগাদি করে যদি এত লোক আসতে পারে, তাহলে মন্দির–মসজিদ খুলতে কী অসুবিধে?‌ বরং এই সঙ্কট থেকে মুক্তি পেতে মানুষ একটু প্রার্থনা করার সুযোগ পাবে। তাই রবিবার থেকেই মন্দির–মসজিদ খুলে যাবে।

পরক্ষণেই অবশ্য মুখ্যমন্ত্রী জানান, রবিবার থেকে নয়। কারণ, অনেকদিন ধরে মন্দির–মসজিদ–গুরুদ্বার বন্ধ রয়েছে। কোথাও সাপ–ব্যাং ঢুকে বসে আছে। কোথাও ইঁদুর–বাদুড় ঢুকে আছে। পরিষ্কার করতে অন্তত ৭২ ঘন্টা সময় লাগবে। তাই সোমবার থেকে ধর্মস্থান খোলা হবে।

১ জুন ধর্মস্থান আর ৮ জুন কর্মস্থান। মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন, আগামী ৮ জুন থেকে রাজ্যে সরকারি ও বেসরকারি সমস্ত দফতরে ১০০ শতাংশ কর্মী নিয়ে কাজ শুরু করা যেতে পারে। যেটা এতদিন ৫০ শতাংশ ছিল।

ওই কর্মীরা কী করে অফিসে আসবেন?‌

মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, রেল এবং মেট্রোলেরের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার এক্তিয়ার রাজ্যের নেই। সেটা কেন্দ্র ঠিক করবে। সরকারি–বেসরকারি বাসের পুরষেবা চালু থাকবে। তাতে কোভিড–বিধি মেনে চলাচল করতে হবে।

সন্ধ্যা ৬.৩০

আজই চলে গিয়েছেন ছত্রিশগড়ের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অজিত যোগী। বহুদিন ধরেই ভুগছিলেন।

প্রয়াত জ্যোতিষী বেজান দারুওয়ালা। মৃত্যু হয়েছে করোনায় আক্রান্ত হয়ে। উনি কি নিজের এই ভবিষ্যৎটা দেখতে পেয়েছিলেন ? কৌতূহল রয়ে গেল।

রাত ৯.২০

দিল্লিতে ভূমিকম্প।কম্পনের মাত্রা রিখটার স্কেলে ৪.৫। বড় ক্ষতির খবর এখনও অবধি আসেনি।

রাত ৯.৩৪

মুখ্যমন্ত্রী টুইট করেছেন। বলেছেন, রাজ্য সরকারি অফিসে কর্মীর সংখ্যা ৫০ শতাংশ থেকে ৭০ শতাংশ করা হচ্ছে। অর্থাৎ পূর্বঘোষণা মতো ৮ জুন ১০০ শতাংশ কর্মী নিয়ে কাজ শুরু হবে না। তিনি আরও লিখেছেন, ন্যূনতম বাঁধন-সহ লকডাউন চলবে।

রাত ১০.‌২০

আজ প্রথম সজ্ঞানে এবং স্বচক্ষে একটি পুরোদস্তুর পিপিই কিট দেখলাম। এখন বিভিন্ন অ্যাপে অর্ডার করলে বাড়িতে দিয়ে যাচ্ছে। প্যাকেজ অনুযায়ী দাম ভ্যারি করছে। ৫০০ থেকে ২,০০০ টাকার মধ্যে।

যেটা আমার হাতে এসে পড়ল, সেটা একটু বিস্তারিত। রং সাদা। স্পর্শ সফিস্টিকিটেড এবং পাতলা চটের মতো। তাতে আছে মাথা থেকে পা পর্যন্ত ঢাকা কভার–অল স্যুট (মাথায় হুডি আর গলা থেকে উরুসন্ধি পর্যন্ত জিপ। সেটা খুলেই ওর ভিতরে ঢুকতে হয়)‌, জুতোর কভার, ফেস শিল্ড, ফেস মাস্ক, স্টেরাইল গ্লাভস, স্টেরাইল অ্যাপ্রন, বায়ো ওয়েস্ট ব্যাগ, ট্রান্সপারেন্ট গগল্‌স, সার্জিক্যাল ক্যাপ।

পাঁচমিনিটের ‘ডেমো’–তেই প্রাণ ওষ্ঠাগত। ‌মনে হল, অনেক পাপ করলে এ জিনিস পরে ঘুরতে হয় বা কাজকর্ম করতে হয়। আর মনে হল, কতক্ষণে এটা থেকে বেরোব! চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রতি শ্রদ্ধা বেড়ে গেল। টানা আটঘন্টা এই জিনিসের মধ্যে ঢুকে থাকা যে কী অ্যাচিভমেন্ট, আজ বুঝলাম!‌

সঙ্গে বাড়ল ভয়।

ইয়ার্কি নয়, পরিস্থিতি যেদিকে এগোচ্ছে, তাতে অদূর ভবিষ্যতে এই পিপিই–ই জাতীয় পোশাক হতে চলেছে।

4 thoughts on “লকডাউন ডায়েরি – ২৯ মে, ২০২০

  1. একদম ঠিক বলেছ —Captain —এই করোনা কে নিয়ে ই আমাদের চলতে হবে। দেখা যাক অবস্থা কি দাড়ায়।
    আজকের ডায়েরী বেশ ভাল লাগল 👌👌👌👌
    শেয়ার করলাম।

    Like

Leave a Reply

Fill in your details below or click an icon to log in:

WordPress.com Logo

You are commenting using your WordPress.com account. Log Out /  Change )

Facebook photo

You are commenting using your Facebook account. Log Out /  Change )

Connecting to %s